রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৩:১৫ অপরাহ্ন

২০১৯ : শোভন-রাব্বানীর কলঙ্কজনক বিদায়

২০১৯ : শোভন-রাব্বানীর কলঙ্কজনক বিদায়

স্বদেশ ডেস্ক:

ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক ছিলেন গোলাম রাব্বানী। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্বদ্যিালয়ের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের কমিশন দাবিসহ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগে কমিটির মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার ১০ মাস আগেই সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে কলঙ্কজনকভাবে বিদায় নিতে হয় শোভন-রাব্বানীকে। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এভাবে বিদায় নেয়ার ঘটনা ছাত্রলীগের দীর্ঘ ইতিহাসে এই প্রথম ঘটেছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ থেকে ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ ওঠে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ফারজানা ইসলাম গণভবনে গিয়েও প্রধানমন্ত্রীর কাছে শোভন-রাব্বানীর বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ করেন। ভিসির অভিযোগের পরই সারা দেশে বিষয়টি নিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতার বিরুদ্ধে কমিটি বাণিজ্য, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, স্বেচ্ছাচারিতা, মাদকদ্রব্য সেবন, বিতর্কিত নেতাদের দিয়ে কমিটি গঠন, জেলা সম্মেলন করতে না পারা, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও মন্ত্রীদের উপেক্ষা করা, ফোন না ধরাসহ একগুচ্ছ অভিযোগের বিষয়টি নতুন মাত্রা পায়। তাদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড নিয়ে সর্বমহলে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন অঙ্গনে ছাত্রলীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের প্রতি তীব্রভাবে নিন্দার ঝড় ওঠে।

শোভন-রাব্বানীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গুরুত্বের সাথে আমলে নেন। এরপর গত ৭ সেপ্টেম্বর দলের যৌথসভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং কমিটি ভেঙে দেয়ার নির্দেশ দেন। ৮ ও ৯ সেপ্টেম্বর গণভবনে দলীয় সভাপতির সাথে দেখা করতে গিয়ে ফেরত আসেন শোভন-রাব্বানী। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে প্রবেশের তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয় ছাত্রলীগের সভাপতি মো: রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর নাম। যার ফলে তাদের গণভবনে প্রবেশের স্থায়ী পাস স্থগিত হয়ে যায়। এটাও ছাত্রলীগের জন্য চরম লজ্জাজনক ও বিব্রতকর। ভুল সংশোধনের সুযোগ চেয়ে এবং ক্ষমা প্রার্থনা করে প্রধানমন্ত্রী বরাবর গোলাম রাব্বানী চিঠি লিখলেও অভিযোগের পাল্লা ভারী হওয়ায় শেষ রক্ষা হয়নি তাদের। শেষমেষ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের পদ হারান শোভন-রাব্বানী। কাজের পরিধি সীমিত করে বাকি মেয়াদের জন্য আল নাহিয়ান খান জয়কে ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং লেখক ভট্টাচার্যকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়।

ছাত্রলীগের সভাপতির পদ থেকে অপসারিত হওয়ার পরই নানামুখী চাপে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটে ছাত্রপ্রতিনিধির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন শোভন। ছাত্রলীগ সভাপতি হিসেবে ডাকসুর নির্বাচনে ভিপি পদে প্রার্থী হয়ে হারলেও নির্বাচিত ডাকসুর মনোনয়নে সিনেটে ছাত্রপ্রতিনিধি হয়েছিলেন তিনি। শোভন-রাব্বানীকে পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আনন্দ-উল্লাস করেন ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতরা।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877